Thursday, October 23, 2025

৩০০ আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, ফোন দিয়ে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করলেন তারেক রহমান

আরও পড়ুন

জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি। এবার আর বিলম্ব নয়- এমন সিদ্ধান্তে দলটি প্রায় ৩০০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্তের পথে। আর সেই প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত হয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই।

তিনি দলের মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থীদের ফোন করে নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ দিচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সর্বশেষ খবর পেতে ঢাকাপ্রকাশ এর গুগল নিউজ চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন । দলটির গুলশান কার্যালয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক। সেসব বৈঠকে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পাশাপাশি ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন তারেক রহমান। জেলা ভিত্তিক এই বৈঠকগুলোর ফলাফল অনুযায়ী এখন একেকটি আসনে একজন করে প্রার্থীকে বাছাই করা হচ্ছে। বগুড়া জেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী নিশ্চিত করেছেন, জেলার পাঁচটি আসনে তারেক রহমান ফোন করে প্রার্থীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।

আরও পড়ুনঃ  ১০ বছরের মধ্যে স্বর্ণের দামে সবচেয়ে বড় পতন

বগুড়া-১ আসনে কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৩-এ আবদুল মহিত তালুকদার, বগুড়া-৪-এ মোশাররফ হোসেন, বগুড়া-৫-এ জি এম সিরাজ এবং মেহেরপুর-১ ও ২ আসনে মাসুদ অরুণ ও আমজাদ হোসেনকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বগুড়া-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, “তিনি (তারেক রহমান) আমাকে সরাসরি ফোন দিয়েছেন।

পরে শুনেছি আরও তিনজনকে ফোন দিয়েছেন কাজ করার জন্য। এটিকে আপনি সবুজ সংকেত বলতে পারেন, আবার প্রাথমিক মনোনয়নও বলতে পারেন। বিষয়টি স্পষ্ট—যাদের ডাকা হচ্ছে, তারা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় পড়ছেন।” মেহেরপুর-২ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমাকে বলা হয়েছে, গাংনীতে ধানের শীষকে তৈরি দিন এবং তা যেন আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।” একইভাবে, মাসুদ অরুণ বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে, জনগণের সঙ্গে থাকুন, মাঠে থাকুন, কারণ সময় দ্রুত আসছে।” রাজধানী ঢাকাতেও চলছে এই একই প্রক্রিয়া।

দলের পক্ষ থেকে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে নির্বাচনী প্রস্তুতির কথা। ঢাকার ১৬ নম্বর আসনে আমিনুল হক, ৮ নম্বরে মির্জা আব্বাস এবং ৪ নম্বরে তানভীর আহমেদ রবিনকে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জোট রাজনীতির অংশ হিসেবে কিছু আসনে মিত্রদের প্রার্থিতা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াও চলছে। জানা গেছে, ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপির জোটসঙ্গী ববি হাজ্জাজ এবং ঢাকা-১৭ আসনে আন্দালিব রহমান পার্থকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এমনকি নির্দলীয় প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাও আছে ঢাকা-১৪ আসনে।

আরও পড়ুনঃ  ব্রেকিং নিউজঃ সংসদ নির্বাচনে ৮ বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত লিস্টসহ দেখে নিন

তবে এসব সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয় এবং মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হবে। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক জানিয়েছেন, “আমরা যেভাবে মৌখিক নির্দেশনা পেয়েছি, সেভাবেই জনগণের কাছে যাচ্ছি। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আমাদের নাম ঘোষণা না করলেও বুঝিয়ে দিয়েছে যে আমাদের মাঠে নামতে হবে।” এদিকে নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে তার আগেই কেন এত তোড়জোড়—এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ।

আরও পড়ুনঃ  সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

তার ভাষায়, “ভুল বোঝাবুঝি দূর করা, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তোলার জন্য সময় দরকার। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর যে অল্প সময় পাওয়া যায়, তা যথেষ্ট নয়।” তিনি আরও জানান, যেসব আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই বা দ্বন্দ্ব কম, সেসব জায়গায় আগেভাগে প্রার্থী জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে সবকিছুই প্রাথমিক, চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় মূল্যায়নের পর।

জানা গেছে, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার ও দলীয় মূল্যায়নের পর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ তিনশ আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে জোটগত সমঝোতার কারণে অন্তত ৫০টি আসনে পরিবর্তন আনা হতে পারে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ